مِنَ الۡجِنَّۃِ وَ النَّاسِ ٪﴿۶﴾

জ্বিন ও মানুষের মধ্য হতে। [১] [১] অর্থাৎ, এই কুমন্ত্রণাদাতা হল দুই শ্রেণীর। (১) শ




য়তান জ্বিনঃ শয়তান জ্বিনদেরকে মহান আল্লাহ মানুষকে ভ্রষ্ট করার ক্ষমতা দিয়ে রেখেছেন। এ ছাড়া প্রত্যেক মানুষের সাথে একজন শয়তান সাথী হিসাবে সদা বিদ্যমান থাকে; সেও তাকে ভ্রষ্ট করার প্রচেষ্টায় থাকে। হাদীসের মধ্যে বর্ণিত হয়েছে যে, যখন নবী (সাঃ) ঐ কথা লোকদেরকে বললেন, তখন সাহাবাগণ জিজ্ঞাসা করলেন, হে আল্লাহর রসূল! আপনার সাথেও কি শয়তান বিদ্যমান থাকে। তিনি উত্তরে বললেন, "হ্যাঁ, আমার সাথেও থাকে। তবে আল্লাহ তাআলা তার বিরুদ্ধে আমাকে সাহায্য দান করেছেন; যার ফলে সে আমার অনুগত হয়ে গেছে। সে আমাকে মঙ্গল ব্যতীত কিছু আদেশ করে না।" (সহীহ মুসলিম, কিয়ামতের বিবরণ অধ্যায়) অনুরূপ অন্য হাদীসে এসেছে যে, একদা নবী (সাঃ) যখন ই'তিকাফ অবস্থায় ছিলেন তখন তাঁর পবিত্রা সহধর্মিণী স্বাফিয়্যাহ (রাঃ) তাঁর সাক্ষাতে (মসজিদে) এলেন। সময়টা রাত্রিবেলা ছিল। সাক্ষাতের পর তিনি তাঁকে বাড়িতে পৌঁছে দেওয়ার জন্য তাঁর সঙ্গে বের হলেন। রাস্তায় দুই আনসারী সাহাবী পার হচ্ছিলেন। তিনি তাঁদেরকে ডেকে বললেন, "এটি আমার স্ত্রী স্বাফিয়্যাহ বিন্তে হুয়াই।" তাঁরা আরজ করলেন যে, 'আপনার সম্পর্কে কি আমাদের কোন কুধারণা হতে পারে হে আল্লাহর রসূল?!' তিনি বললেন, "তা তো ঠিক কথা। কিন্তু শয়তান যে মানুষের রক্ত-ধমনীতে রক্তের মতই প্রবাহিত হয়। আমার আশঙ্কা হল যে, হয়তো বা সে তোমাদের মনে কোন সন্দেহ প্রক্ষিপ্ত করে দিতে পারে।" (সহীহ বুখারী, আহকাম অধ্যায়) (২) মানুষ শয়তানঃ মানুষের মধ্যে কিছু শয়তান আছে যারা উপদেষ্টা, হিতাকাঙ্ক্ষী ও দয়াবানরূপে এসে অপরকে ভ্রষ্ট হতে উদ্বুদ্ধ করে। কোন কোন উলামা বলেন, শয়তান যাদেরকে ভ্রষ্ট করে, তারা হল দুই শ্রেণীর। অর্থাৎ, শয়তান মানুষকে যেমন ভ্রষ্ট করে তেমনি জ্বিনকেও ভ্রষ্ট করে থাকে। তবে এখানে মানুষের অন্তরের উল্লেখ তার ভ্রষ্টতার তুলনামূলক আধিক্যের কারণে করা হয়েছে। নচেৎ জ্বিন সম্প্রদায়ও শয়তানের কুমন্ত্রণায় ভ্রষ্টতার শিকার হয়। কিছু সংখ্যক উলামা বলেন, কুরআনে জ্বিনদের জন্যও 'রিজাল' (পুরুষ মানুষ) শব্দ ব্যবহার করা হয়েছে। (সূরা জিন ৭২:৬ নং আয়াত) সুতরাং তারাও মানুষ শব্দে শামিল।

Comments

Popular Posts

یٰۤاَیُّہَا الَّذِیۡنَ اٰمَنُوۡا کُوۡنُوۡا قَوّٰمِیۡنَ لِلّٰہِ شُہَدَآءَ بِالۡقِسۡطِ ۫ وَ لَا یَجۡرِمَنَّکُمۡ شَنَاٰنُ قَوۡمٍ عَلٰۤی اَلَّا تَعۡدِلُوۡا ؕ اِعۡدِلُوۡا ۟ ہُوَ اَقۡرَبُ لِلتَّقۡوٰی ۫ وَ اتَّقُوا اللّٰہَ ؕ اِنَّ اللّٰہَ خَبِیۡرٌۢ بِمَا تَعۡمَلُوۡنَ ﴿۸﴾ হে বিশ্বাসীগণ! তোমরা আল্লাহর উদ্দেশ্যে (হকের উপর) দৃঢ় প্রতিষ্ঠিত (এবং) ন্যায়পরায়ণতার সাথে সাক্ষ্যদাতা হও।[১] কোন সম্প্রদায়ের প্রতি বিদ্বেষ তোমাদেরকে যেন কখনও সুবিচার না করাতে প্ররোচিত না করে।[২] সুবিচার কর, এটা আত্মসংযমের নিকটতর এবং আল্লাহকে ভয় কর। তোমরা যা কর, আল্লাহ তার খবর রাখেন। [১] প্রথম অংশের ব্যাখ্যা সূরা নিসার ৪:১৩৫ নং আয়াতে উল্লেখ করা হয়েছে। নবী (সাঃ)-এর নিকট ন্যায্য সাক্ষীর কত বড় গুরুত্ব ছিল, তা এই ঘটনার দ্বারা অনুমান করা যায়। হাদীসে বর্ণিত হয়েছে যে, নু'মান বিন বাশীর (রাঃ) বলেন, আমার পিতা আমাকে কিছু হাদিয়া (দান) দিলেন, তা দেখে আমার মাতা বললেন, 'এই হাদিয়া বা দানের উপর যতক্ষণ পর্যন্ত আপনি আল্লাহর রসূল (সাঃ)-কে সাক্ষী না রাখবেন, ততক্ষণ পর্যন্ত আমি সন্তুষ্ট হব না।' সুতরাং আমার পিতা রসূলে কারীম (সাঃ)-এর নিকট উপস্থিত হয়ে, (ঘটনা বর্ণনা করলেন।) তখন রসূল (সাঃ) জিজ্ঞাসা করলেন; "তুমি তোমার সমস্ত সন্তানদেরকে অনুরূপভাবে হাদিয়া বা উপঢৌকন দিয়েছ কি?" প্রতি উত্তরে (আমার আব্বা) বললেন, 'না।' অতঃপর রসূল (সাঃ) বললেন, "আল্লাহকে ভয় কর এবং সন্তানদের মাঝে সমদৃষ্টিসম্পন্ন সুবিচার কর।" তিনি আরো বললেন, "আমি যুলুমের (অন্যায়ের) সাক্ষী হতে পারব না।" (সহীহ বুখারী ও মুসলিম / কিতাবুল হিবা বা দানপত্র নামক অধ্যায়) [২] এ অংশের ব্যাখ্যা সূরা মায়িদার ৫:২ নং আয়াতে উল্লেখ করা হয়েছে।