اَلَمۡ تَرَ اَنَّ اللّٰہَ اَنۡزَلَ مِنَ السَّمَآءِ مَآءً فَسَلَکَہٗ یَنَابِیۡعَ فِی الۡاَرۡضِ ثُمَّ یُخۡرِجُ بِہٖ زَرۡعًا مُّخۡتَلِفًا اَلۡوَانُہٗ ثُمَّ یَہِیۡجُ فَتَرٰىہُ مُصۡفَرًّا ثُمَّ یَجۡعَلُہٗ حُطَامًا ؕ اِنَّ فِیۡ ذٰلِکَ لَذِکۡرٰی لِاُولِی الۡاَلۡبَابِ ﴿٪۲۱﴾
তুমি কি দেখ না, আল্লাহ আকাশ হতে বৃষ্টি বর্ষণ করেন, অতঃপর ভূমিতে ঝরনারূপে প্রবাহিত করেন[১] এবং তা দিয়ে বিবিধ বর্ণের ফসল উৎপন্ন করেন,[২] অতঃপর এ শুকিয়ে যায় এবং তোমরা তা পীতবর্ণ দেখতে পাও, অবশেষে তিনি তা টুকরা-টুকরা করে দেন? [৩] এতে অবশ্যই বুদ্ধিশক্তিসম্পন্ন লোকদের জন্য উপদেশ রয়েছে। [৪] [১] يَنَابِيْعَ - يَنْبُوْعٌ এর বহুবচন। এর অর্থ ঝরনা। অর্থাৎ, বৃষ্টি রূপে আকাশ থেকে পানি বর্ষণ হয় এবং তা শোষিত হয়ে ভূগর্ভে নেমে গিয়ে ঝরনার আকারে নির্গত হয় অথবা পুকুরসমূহে ও নদী-নালায় সংরক্ষিত হয়ে যায়। [২] অর্থাৎ, সেই একই পানি দ্বারা বিভিন্ন প্রকার ফসল উৎপন্ন করেন, যার রঙ, স্বাদ, গন্ধ এক অপর থেকে আলাদা। [৩] অর্থাৎ, সবুজ ও তরতাজা হওয়ার পর সেই ফসল শুকিয়ে হলুদবর্ণ হয়ে যায় অতঃপর টুকরো টুকরো হয়ে (শস্য ও খড়কুটা বা ভুসি আলাদা আলাদা হয়ে যায়) যেমন গাছের ডাল শুকিয়ে ভেঙ্গে চুর চুর হয়ে যায়। [৪] অর্থাৎ, বুদ্ধিমান জ্ঞানী ব্যক্তিগণ এর মাধ্যমে বুঝতে পারেন যে, পৃথিবীর উদাহরণও অনুরূপ। পৃথিবী অতি অল্প সময়ের মধ্যে ধ্বংস হয়ে যাবে। পৃথিবীর চাকচিক্য ও সতেজতা, তার শ্যামলতা ও সৌন্দর্য এবং তার আমোদ-প্রমোদ ও আরাম-আয়েশ ক্ষণকালের জন্য। এ সকল বস্তুকে মানুষের মন-প্রাণ দিয়ে ভালবাসা উচিত নয়। বরং সেই মৃত্যুর প্রস্তুতিতে ব্যস্ত থাকা দরকার, যার পরের জীবন হল চিরস্থায়ী জীবন, যার কোন শেষ নেই। কেউ কেউ বলেন, এ হল কুরআন ও ঈমানদার ব্যক্তির হৃদয়ের উদাহরণ। উদ্দেশ্য হল যে, আল্লাহ তাআলা আকাশ থেকে কুরআন অবতীর্ণ করেছেন; যা তিনি মু'মিনদের হৃদয়ে প্রক্ষিপ্ত করেন। অতঃপর তার দ্বারা দ্বীন উদগত হয়। আর তার ফলে মানুষ এক অপরের চেয়ে শ্রেষ্ঠ বিবেচিত হয়। সুতরাং মু'মিনগণের ঈমান ও একীন বৃদ্ধি পায়। আর যাদের মনে রোগ আছে তারা শুকিয়ে যাওয়া ফসলের মত শুকিয়ে যায়। (ফাতহুল ক্বাদীর)
Comments
Post a Comment